কার্টুন- প্রতিবাদের ভাষা

Tanmoy Cartoons
8 min readAug 8, 2024

--

গত কয়েক দিন ধরে কার্টুন আঁকতে বেশ অদ্ভুত লাগছে। আঁকতে গিয়ে ভয়ঙ্কর রাষ্ট্রবিরোধী কোন কাজ করছি বলে মনে হচ্ছে না, কখন কারা এসে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায় সেই টেনশনে সিসি টিভির দিকে বারবার তাকাতে হচ্ছে না। ফেইসবুকে পোস্ট করার আগে ১০ বার ব্যাক-এন্ড ফোর্থ চিন্তাও করতে হচ্ছে না। এমনকি পোস্ট করার পর ‘স্টে সেফ’ বা “বি কেয়ারফুল” টাইপ কমেন্টও পাচ্ছি না। মোট কথা, ব্যাপারটা এখন কেমন যেন একটু বোরিং আর লেস চ্যালেঞ্জিং ঠেকছে।

Cartoon drawn back in 2013 for Dhaka Tribune

অনেকে ভাবছেন হয়তো ব্যাপারটাকে বাড়িয়ে লিখছি। কিন্তু না! গত ১০-১৫ বছর যারা বাংলাদেশের কার্টুনিস্টদের কাজ ফলো করেছেন তারা জানেন, সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টে হাজতে যাওয়ার ভয় কিংবা দেশের ভিন্ন প্রান্ত থেকে কোনো দলিয় নেতা কিংবা চাটুকার আইনজীবীর কাছ থেকে কারণ বা অকারণে মানহানির মামলা খাওয়ার ভয় ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার। তাই আজ আবার কার্টুন আঁকতে বসে যখন হঠাৎ করে বেশ ফুরফুরা লাগছে, তখন গত ১০ বছরের কিছু কথা না লিখে পারছি না।

Why not just stay in power? -2014

আমার আঁকা এই কার্টুনটি ছাপা হয় ২০১৪ সালের নির্বাচনের পরদিন ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার প্রথম পাতায়। যেখানে শেখ হাসিনা নিজেকে নিজে মুকুট পরিয়ে দিচ্ছেন আর পেছনের গেট থেকে বিদায় নিচ্ছে গণতন্ত্র। কিন্তু না, কার্টুনটি সেদিন পুরোপুরি ছাপা হয়নি, আর্কাইভ ঘাটলে দেখতে পাবেন পেছন থেকে কেটে ফেলে দেওয়া হয়েছিল গণতন্ত্র চলে যাবার অংশটি। কারণ? সেদিন আরও অনেকের মতোই পত্রিকার নিউজ এডিটরের কাছে আমার নির্বাচন নিয়ে এই পর্যবেক্ষণকে কিছুটা বাড়াবাড়ি মনে হয়েছিল।

আর্কাইভ লিঙ্কঃ https://www.dhakatribune.com/opinion/op-ed/51101/why-not-just-stay-in-power

২০১৪ সালের পর থেকে আমি একা নই বরং বাংলাদেশের অধিকাংশ কার্টুনিস্টরাই বলতে শুরু করেন যে তাদের বাকস্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। বলা হয়ে থাকে, তুমি যদি একটি দেশের গণতান্ত্রিক অবস্থা বুঝতে চাও তাহলে সবার আগে তাদের রাজনৈতিক কার্টুনিস্টদের দিকে তাকাও। কিন্তু আমরা তখন যতই আওয়াজ তুলি, বাংলাদেশের এই ক্ষুদ্র কার্টুনিস্ট গোষ্ঠীর দিকে মনোযোগ দেয়ার মত সময় কারো ছিল না। বরং অনেক নেতা এবং সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাদের “দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছি” বলে অভিযুক্ত করেন।

এর পরের বছর, ২০১৫ সালের একটা ঘটনা বলি- তখন সবে মাত্র শহরের বিজ্ঞাপন বিলবোর্ডগুলিকে রাষ্ট্রীয়করণ করা হচ্ছে (!) অর্থাৎ যেদিকেই তাকাই শুধু দেখি বিলবোর্ডে শেখ হাসিনার জয়জয়কার। ঢাকা শহরে এরকম বিলবোর্ডে সরকারি প্রপাগান্ডা তখনো কেউ দেখেনি আগে। তো সেসময় নিউজ আসলো সায়দাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট সময় মত পানি পরিষ্কার না করায় শহরবাসীর ভোগান্তি হচ্ছে। নিউজ হিসেবে খুবই সাধারন। আমাকে কার্টুন করতে বলা হলে আমি এই কার্টুনটি আঁকলামঃ

May 2015 — Saidabad water treatment plant missed its July dead line. The never ending summer water crisis could not be solved by 2015.

পানির কল থেকে অদ্ভুত বর্জ্য পদার্থ বের হচ্ছে আর আম জনতা অসহায় হয়ে দূরের বিলবোর্ডে প্রধানমন্ত্রীর ভিক্ট্রি সাইনের দিকে তাকিয়ে আছে। কার্টুনে শেখ হাসিনা মূল বিষয় না হলেও এবং কার্টুনটি খবরের কাগজের ভেতরে খুবই অ-উল্লেখযোগ্য স্থানে ছাপা হওয়া সত্ত্বেও সিআরআই অফিসে আমার নামে ছাত্রলীগ/আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একাধিক কমপ্লেইন এসেছে বলে জানানো হল। আমার এই কার্টুনটি যে কার্টুন হয়নি, এবং কিভাবে সকল বিষয়ে পিএমকে দোষ দিয়ে কার্টুন আঁকা যাবে না, সেটাও জানানো হল। (সে সময় আমি সিআরআই এর সাথে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী নিয়ে মুজিব গ্রাফিক নভেল আঁকছিলাম, সেই থেকে এই সম্পৃক্ততা। যদিও মুজিব গ্রাফিক নভেল শুরু করার প্রথম থেকেই আমি আমার রাজনৈতিক কার্টুন চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলাম, তবুও প্রায়শই আমাকে চাপের মুখে পরতে হতো।)

এই কথাগুলো বলছি কারন ধীরে ধীরে একটি স্লো প্রসেসের মাধ্যমে কিভাবে আমাদের/ আমার বাকস্বাধীনতা সর্বদা চাপের মধ্যে পড়ছিল সেটার একটি উদাহরন হিসেবে।

এর পরবর্তীতে, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে মনে পড়ে একুশে বইমেলায় যখন লেখক-ব্লগার অভিজিত রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হলো, তখন এই কার্টুনটি এঁকেছিলামঃ

Bangladeshi blogger ‘Avijit Roy’ hacked to death

একটা রক্তাক্ত কলম টুকরো টুকরো হয়ে পড়ে আছে। তার সামনে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকেরা যেন চোখে ঠুলি পরে দাঁড়িয়ে। এডিট এসেছিল, মুজিব কোর্ট পরা নেতা আঁকা যাবে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, কার্টুনটি খবরের কাগজের কোনো পাতাতেই জায়গা পায়নি সেদিন কিংবা পরবর্তী কোনো দিনে। আমার একই বিষয়ের আরো দুটো কার্টুন একটি আন্তর্জাতিক পাবলিকেশনে ছাপা হয় তার কিছুদিন পরে। আমার বিরুদ্ধে দেশের ভাবমূর্তি খুন্ন করার অপবাদ চলতে থাকে।

ঐ সায়দাবাদ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কার্টুনটি ফেইসবুকে পোস্ট করার পর একজন একটা কমেন্ট করেছিলেন যেটা সবসময় আমার মনে গেঁথে থাকে। ওই কার্টুনে মাননীয় নেত্রীকে নিয়ে মশকরা করায় ভদ্রলোক বিরক্ত হন। তিনি আমাকে লিখেছিলেনঃ “আর কিছু না পারলেও খোঁচাটাতো ঠিকই মারতে পারেন।”

কথাটা শুনে আমি এতটাই আমোদিত হয়েছিলাম যে আমার কাছে মনে হয়েছিল ব্যাপারটা অনেকটা একজন বিচারপতিকে বলার মত যে, “আর কিছু না পারলেও বিচারটাতো ঠিকই করতে পারেন।” কিংবা একজন ট্রাফিক পুলিশকে বলার মত যে, “কাজের কাজ তো কিছু পারেন না, রাস্তাতো ঠিকই আটকাতে পারেন।” ভদ্রলোককে আর উত্তর দেয়া হয়নি যে আমি একজন কার্টুনিস্ট, ক্ষমতায় থাকা মানুষদের কালি কলমে, বিদ্রূপে-খুঁচিয়ে মনে করিয়ে দেওয়াই আমার কাজ, যে তাঁরা জনগণের সেবক মাত্র।

Press Freedom ‘Bangla Style’ Cartoon done for: BenarNewsBengali — 2021

যাইহোক, ততদিনে সেন্সরশিপের চার দেয়াল উঠে গেছে আমাদের চারপাশে। দেয়ালগুলো হচ্ছে যথাক্রমে: একদিকে সরাসরি সরকারি সেন্সরশিপ, তারপরে নিউজপেপারের নিজস্ব সেন্সরশিপ, তার পাশে অডিয়েন্স সেন্সরশিপ (রাজনৈতিক মতামত শেয়ার করার প্রতি ভয় থেকে অনীহা) এবং শেষমেষ কার্টুনিস্ট-জার্নালিস্টদের সেলফ সেন্সরশিপ। এই চার দেয়ালের সেন্সরশিপের কারাগারে আমরা আটকে পড়ছিলাম দিনে দিনে।

In a free society the biggest danger is that you’re afraid to the point where you censor yourself. Published on daily star. -2020

মরার ওপর খাড়ার ঘা হিসেবে, সরকারের সেন্সরশিপকে পোক্ত করতে, আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারা, যা পরবর্তীতে ২০১৮ সালে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (DSA) হয়ে আরও ভয়ঙ্করভাবে চেপে বসলো আমাদের মাথার ওপর।
এই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের চাপে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে পত্রিকা থেকে নির্দেশ আসলো কার্টুন আঁকলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ আঁকা যাবে না। আঁকলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ বাদ দিয়ে কার্টুন আঁকতে হবে। সেসময় আঁকলাম এই কার্টুনটিঃ

Follow me to development!- 2018

ফলো মি টু ডেভেলপমেন্ট। যেখানে ইন্সটাগ্রামের ফলো মি ট্রেন্ডের মতো কিন্তু দুমড়ে-মুচড়ে জনগণের হাতকে জোড় করে টেনে নেওয়া হচ্ছে উন্নয়নের দিকে।

এই কার্টুনটি সহ যখন ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময়, আমার আঁকা বিরোধী দলের ওপর পুলিশি বর্বরতা নিয়ে করা একটি কার্টুনও পত্রিকায় প্রকাশিত হলো না, তখন বুঝলাম পত্রিকায় আমার কার্টুন করার দিন বোধ হয় শেষ হয়ে এসেছে। তাই তখন নির্বাচনের সকল কার্টুনগুলো একত্রিত করে পোস্ট করলাম ফেইসবুক আর আমার মিডিয়াম ব্লগে। (ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট স্বত্ত্বেও এর আগেও বেশিরভাগ কার্টুনই নিজ দায়িত্বে ফেইসবুকেই পোস্ট করতাম।)
কার্টুন গুলোর লিঙ্কঃ https://medium.com/@tanmoycartoons/election-cartoon-2018-3e64abcef92d

law enforcer with an allusion to the ruling party’s electoral sign of a boat.

ফলাফল, নির্বাচনের আগের দিন আঁকা বিরোধীদলের ওপর পুলিশী বর্বরতার কার্টুনটি শেয়ার/পোস্ট হলো বিএনপির অফিসিয়াল পেইজ থেকে। (নাকি খালেদা জিয়ার অফিসিয়াল পেইজ, মনে নাই)।শুভানুধ্যায়ীরা জানালেন আমার সম্পর্কে নাকি ডিজিএফআই থেকে খবর নেওয়া হচ্ছে। মনে পরে সেদিন রাতে পত্রিকা অফিসে বসে খুব মানসিক চাপ বোধ করেছিলাম । কারন তার কিছুদিন আগেই সড়ক আন্দোলন নিয়ে প্রতিবাদ করায় আলোকচিত্রী শহিদুল আলম কে সরকার তুলে নিয়ে গিয়েছিল। এবং তা ছিল আমাদের সকল ফটোগ্রাফার, আর্টিস্ট, মিউজিশিয়ান, কার্টুনিস্টদের প্রতি স্বাভাবিক ভাবেই একটি পরিষ্কার ওয়ারনিং!

সেসময় আমার এক বন্ধু জানালেন তার কাছে খবর আছে আমার নামে নাকি আগে থেকেই ডিবি অফিসে একটি ফাইল আছে। যা শুনে আমি একই সাথে ভীত ও পুলকিত হয়ে উঠলাম। আমি বন্ধুকে বলেছিলাম যে, “যেইদিন এই সরকারের পতন হবে, পারলে আমাকে সেই ফাইলটা যোগাড় করে দিও। আমি আসলে দেখতে চাই সরকারের এত গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার কি আসলেই ফাইল ভরা সব কার্টুন রয়েছে?!”

2018 election-Level playing field ensured.

আবার অপরদিকে নির্বাচনের পরদিন থেকে কোনো এক গায়েবী কারণে আমার এই মিডিয়াম ব্লগের পেইজটি দেশে বন্ধ হয়ে গেল। ফেইসবুকে এটি নিয়ে লেখালেখি করায় সন্দেহজনকভাবে আমার ব্লগ পোস্টটি একদিন পর ফেরত আসলো। এই ঘটনা গুলোর কোনো কারণ আমি জানি না, কিংবা এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করার কোনো উপায় নেই আমার কাছে। তবে এইটুকু জানি, ২০১৮ নির্বাচনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমার ভেরিফাইড ফেইসবুক পেইজে (Tanmoy Cartoons) যেকোনো রাজনৈতিক কার্টুন পোস্ট দিলে এখনো তার রিচ আশ্চর্যজনকভাবে কমে যায়। এখানে হয়তো কোনো ডিজিটাল সেন্সরশিপ রয়েছে, হয়তো নেই, কে জানে!

Digital Bangladesh had turned analogue for several times in 2015 as popular social media sites Facebook, Twitter, Viber etc was banned by the government for “security” reason.

সবার আসলে প্রথমে বাক স্বাধীনতার প্রয়োজন পড়ে না। আপাতদৃষ্টিতে কৃষকের চাষ করতে আর ফসল বেচতে পারলেই দিন চলে যায়, বাক স্বাধীনতা দিয়ে তো তার পেট চলে না। যার গ্রামে হাসপাতাল নেই, তার তো দরকার হাসপাতাল আগে, সে ভাবে সে বাক স্বাধীনতা দিয়ে কি করবে। উন্নয়নের রাজনীতিতে তাই এভাবেই সবাইকে বোঝানো হয়েছিল বাক স্বাধীনতার অপ্রয়োজনীয়তা।
আর আমরা যারা আর্টিস্ট, কার্টুনিস্ট, লেখক, শিল্পী যাদের গেয়ে, লিখে, বলে ওঠাই কাজ, তাদেরকে দিন দিন পেঁচিয়ে যেতে দেখলাম সেন্সরশিপের জুজুর ভয়ে। যে সেন্সরশিপ তৈরি হয়েছিল পত্রিকা, টিভি, মিডিয়া হাউজের মাধ্যমে সকল সাংবাদিক, কার্টুনিস্ট, ফটোগ্রাফার, শিল্পী, সংস্কৃতি কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে।

তবে কার্টুনিস্ট-সাংবাদিকদের মতো সবাই সবার প্রথমে বাক স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তা না বুঝলেও ধীরে ধীরে সবাই ঠিকই বুঝতে শুরু করে যখন সরকারের দুর্নীতি ও জুলুম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কৃষকের যখন পেটে লাথি পড়ে কিংবা হাসপাতালের বাজেট যখন দশভুতে মেরে খায়, ততদিনে বড় দেরি হয়ে গেলেও সবাই ধীরে ধীরে বুঝতে শুরু করে।

The cost of development -2022

২০১৯ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত পত্রিকার প্রথম পাতায় আমার আর একটিও কার্টুন আঁকার সুযোগ হয়নি। এমনকি ছাত্রদের সড়ক আন্দোলন নিয়ে সব কার্টুনগুলো ছাত্ররাই সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়। এক্ষেত্রে কোনো পত্রিকা বা সংবাদ মাধ্যমের তেমন কোনো ভূমিকা ছিল না। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে আমার খবরের কাগজের চাকরিটি চলে যায়। কারণটা খুবই স্বাভাবিক, কার্টুন ছাপা হয় না যে দেশে, সেই দেশে কার্টুনিস্ট দিয়ে পত্রিকার কি কাজ।

২০১৯-এর পর থেকে তাই বিভিন্ন সময় কার্টুনে প্রতিবাদ করার জন্য ফেইসবুক আর ইন্সটাগ্রামই ছিল আমার শেষ ভরসা। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট-এ যখন কার্টুনিস্ট কিশোর, মোস্তাক আহমেদ এবং সাংবাদিক কাজলকে জেলে ভরা হয়, তখন বাংলাদেশের কিছু কার্টুনিস্ট সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই এর প্রতিবাদে কার্টুন এঁকে যান।

Cartoonist Kishore, Journalist Kajol detained under Digital Security Act

২০২৪ সালের জুলাই মাসে এসে কোটা আন্দোলনে দেশের সকল ছাত্রছাত্রীদের ওপর যে অমানুষিক অত্যাচার চলছিল তা নিয়ে আবার যখন কার্টুন আঁকা শুরু করলাম, তখন মনে হল যেন কার্টুনের ভেতর দিয়ে আমি এক ইতিহাসের সাক্ষী হচ্ছি। এই আন্দোলন যখন ৯ দফা থেকে ১ দফা হয়ে সরকারের পতনের আন্দোলনে পরিণত হলো, তার সাথে আমাদের দেশের কার্টুনিস্টদের কার্টুনগুলো সোস্যাল মিডিয়া থেকে দলে দলে মিছিলে-ব্যানারে আন্দোলনের ভিজুয়াল হয়ে উঠলো। যে সময় সারা দেশের প্রথিতযশা শিল্পীরা টু শব্দটি করেননি, তখন এদেশের কার্টুনিস্টরা, তরুণ ছাত্র-ছাত্রী ও ডিজিটাল আর্টিস্টরা হাতে কলম তুলে নির্ভয়ে প্রতিবাদ করেছেন।

Same cartoon redrawn after 11 years just to prove a point that the attitude was always same.

নিউজ লিঙ্কঃ https://www.dhakatribune.com/bangladesh/politics/26835/%E2%80%9Ctalks-to-decide-on-interim-government-chief%E2%80%9D

শেষ কথা:

কার্টুনিস্ট হিসেবে আমি কোনো দলের নই। অনেকেই প্রায়ই বলতেন কার্টুনে সরকারের সমালোচনা তো করেছেন, এখন প্রশংসাও করুন। তাদের জানিয়ে রাখতে চাই, দুঃখিত, সরকারের প্রশংসা করা বা ব্যালেন্স করা এসব আমার কাজ নয়। ছাত্র-জনতা এক স্বৈরাচারকে উৎখাত করে আজ যখন এ লেখাটি লিখছি, তখন ক্ষমতায় এক নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শপথ নিচ্ছেন। সকল কার্টুনিস্ট-আর্টিস্টদের বলছি, এটি আমাদের সময়। ইতিহাসে কোনো সরকার কখনো জনগণকে থালায় করে বাক স্বাধীনতা দিয়ে দেয়নি। এটি প্রতিনিয়ত চর্চা ও ধারণ করার বিষয়। আমরা যারা বাক স্বাধীনতার ফ্রন্ট লাইনার, তাদের ওপর দায়িত্ব বর্তায় এই চর্চাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

কার্টুন হোক প্রতিবাদের ভাষা।

End of Dictatorship.

.

.

.

(ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকা আমার একটি ভালোবাসার জায়গা, ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের চ্যালেঞ্জিং সব কার্টুন (২০১৩-২০১৪) এই ইংরেজী দৈনিকেই আঁকার সুযোগ হয়েছিল আমার। আশাকরি নতুন দেশে আবার নতুন করে এই খবরের কাগজটি আবারসাহসি সব কার্টুন ছাপবে।)

Sign up to discover human stories that deepen your understanding of the world.

Membership

Read member-only stories

Support writers you read most

Earn money for your writing

Listen to audio narrations

Read offline with the Medium app

--

--

Tanmoy Cartoons
Tanmoy Cartoons

Written by Tanmoy Cartoons

Syed Rashad Imam Tanmoy is an editorial cartoonist for Dhaka Tribune, Bangladesh. Founder-Cartoon People Associate Editor-Unmad Satire Magazine and a WPI Fellow

Responses (1)

Write a response